শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১

মাটির কথা

মাটির কথা

মাটি কি সম্পদ নয়? জল-বায়ু-বন-- পরিবেশ নিয়ে যারা চিন্তা করেন, তারা মাটি নিয়ে তেমন বেশি কথা বলতে শুনি না। মাটি ছাড়া তো কিছুই সম্ভব নয়। কিন্তু সেই মাটি নিয়ে আমাদের চিন্তা তেমন নেই দেখতে পাই।
আমাদের রাজ্যটি ছোট। এমনিতেই ত্রিপুরার অধিকাংশ ভূমি বনের দখলে। যদিও বন হাল্কা হয়ে এসেছে, তবু ভূমি অন্তত বনবিভাগের দখলে। সুতরাং সেখানে মানুষের কিছু করার আইনি অধিকার নেই। মোট ভূমির মাত্র এগারো শতাংশ মত জায়গা কৃষি বা বাস্তুনির্মাণের কাজে ব্যবহার করা যাবে। এদিকে ত্রিপুরাতে অবাধে বাড়ছে অন্ত-উদবাস্তুদের সংখ্যা। এরা স্বেচ্ছায় গ্রাম থেকে শহরের দিকে চলে আসছে। গ্রামের কয়েক কানি (ত্রিপুরার জমি পরিমাপের একক) জায়গা বিক্রি করে দিয়ে শহরে ছোট একটি বাড়ি করছে। তাদের প্রয়োজনে শহরের আশে পাশে টিলাগুলো কেটে মাটি এনে নিচু জায়গা ভরাট করার প্রায় এক মহাযজ্ঞ চলছে। ফলে রাজ্যের ভূপ্রকৃতির এক ধীর অথচ নিশ্চিত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। 
ত্রিপুরাতে এখন উন্নয়নের ঢেউ এসেছে। নতুন সড়ক, নতুন ভবন, নতুন স্কুলবাড়ি, নতুন বাজার, আরও অনেক নতুন নির্মাণ হয়ে চলেছে। ফলে ইটের প্রয়োজনে গড়ে উঠছে প্রচুর ভাটা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাষের জমিতে গড়ে ওঠা এসব ভাটাগুলি আশেপাশের ভুমিকেও বন্ধ্যা করে দিচ্ছে।
প্রাকৃতিক উপায়ে মাটি এমনিতেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। বাতাসে, জলে, মানুষের কারণে, পশুচারণে মাটি হারিয়ে যায়। একবার যে মাটি হারায় তাকে আর ফিরে পাওয়া যায় না। উর্বর মাটি, যা আমাদের শষ্য দিতে পারে, তা তৈরি হতে হাজার থেকে কোটি বছরের সময় লেগেছে। আমরা সে মাটি লহমায় শেষ করে দিচ্ছি। হয়তো একদিন আমাদের বোধোদয় হবে। তখন হয়তো কিছুই করার থাকবে না।

২টি মন্তব্য: