অশোক দেব
সদাপুরাণ -১২
লঙ্কর হল এক ধরনের আঁকশি। কিংবা হরপুন। কিন্তু তা দিয়ে কিছু শিকার করে না কেউ। চারমাথার নোঙরের মত দেখতে। শক্ত। বাঁশের তৈরি। লম্বা, মজবুত দড়ির মাথায় সেটা বাঁধা।বর্ষাকালে গোমতী কুলটার মত হাসে। বিশাল বিশাল গাছের শেকড়ে সুরসুরি দিয়ে উপড়ে নিয়ে চলে আসে। এর ঘরের বেড়াটা, ওর সাজানো বাগান পুরোটা, যখন যা মনে আসে টেনে আনে। এইখানে সমতল। এই উদয়পুর। ছনবন। সেই দূর উজান থেকে এতসব গাছপালা, কাঠ, গাছের গুঁড়ি ভেসে ভেসে আসে। সমতল বলে একটু ধীর হয়েছে নদী। পাড়ে দাঁড়িয়ে লোকে সেসব ভেসে আসা জিনিস লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারে লঙ্কর। লাগিয়ে ফেলতে পারলে দড়ি ধরে থাকো। মানুষের রশিতে আটকে পড়া কিছুই নেয় না উন্মাদিনী গোমতী। অর্ধবৃত্তাকার পথে একে পাড়ে এনে ঠেকিয়ে দেয়। মানুষের লাকড়ির অভাব। সেসব সংগ্রহ করে রাখে। শুকিয়ে রাখে। জ্বালায়। এমন একটা লঙ্কর এখন জরিনার ঘরের দরোজায় ঝোলানো। এ জিনিস এখন আর কাজে আসে না। কেউ ছুঁড়বার নেই। কিন্তু জরিনার দরোজায় লঙ্কর ঝোলানোর অর্থ আছে। অর্থাৎ, সে চুপ করলো। মাঝে মাঝে এই জিনিস দরোজায় ঝুলিয়ে সে নীরব হয়ে যায়। কথা বলে না। কোনও লাটের বাট এলেও তাকে আর কথা বলাতে পারবে না। আমি তো খেয়াল করিনি। সেদিন গিয়ে ডাকি, ‘পরীভাবি, পরীভাবি’। নীরব। মজিদভাই বারান্দায়। হাত দিয়ে দেখালো দরোজায় ঝুলে আছে লঙ্কর। তবু ঘরে যাই। একটা আরামচেয়ার। এরকম জিনিস রহিম মিয়াঁ ছাড়া কারও বাড়িতে নেই। জরিনা প্রায় শুয়ে আছে। কেন যে শাড়ি উঠে আছে অনেকটা। পায়ের পাতা দুটি দেখা যাচ্ছে। ফুটে আছে যেন। দেবতার গায়ে পা লাগলে প্রণাম করে পাপস্খালন করে লোকে। এ দুটি পা দিয়ে যেন, উল্টে পূজাই দেওয়া যাবে। যেন ফুল, নিছনি। আমি সদানন্দ দাশগুপ্ত। কু-কু। তাকিয়ে রইলাম। ধীরে নরম হয়ে যাচ্ছে মন। মন যেন একটা কী, কী এই মন? যেন একটা কেমন রান্না, কে যেন আমার মনকে ছোট আঁচে তাতিয়ে কিসের সিরায় চুবিয়ে ধরেছে। এ জিনিস আমার হতে নেই। হতে নেই। বেরিয়ে আসবো, দেখি একটা আলো। সে বাইরে থেকে জরিনার মুখে এসে পড়েছে, নাকি তার নিজের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে বুঝতে পারিনি। ইশারায় বসতে বলল। বসি। জরিনা বেরিয়ে যায়। একটু পরে আসে। একটা বড় প্লেটে নানারকম সন্দেশ, পেতলের গেলাসে জল। গেলাস কুরুশে বোনা ঢাকনায় ঢাকা। আমার খাদ্যে মন নেই। মন অন্যত্র। আড়ে আড়ে সেইদিকে তাকাই যেখানে তার অপার্থিব পায়ের পাতা মাটিকে স্পর্শ করছে। জরিনা কী বোঝে, আমাকে আঙ্গুলের ইশারায় তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে বলে। বাইরে একটা গুনগুনের পিছা করছে মজিদ। সরাইল্যা কুত্তাটাও আছে। তার থাকাটারও একটা শব্দ আছে। খেয়ে নিলাম। জরিনা নেই। কখন বেরিয়ে গেল!
সদাপুরাণ -১২
লঙ্কর হল এক ধরনের আঁকশি। কিংবা হরপুন। কিন্তু তা দিয়ে কিছু শিকার করে না কেউ। চারমাথার নোঙরের মত দেখতে। শক্ত। বাঁশের তৈরি। লম্বা, মজবুত দড়ির মাথায় সেটা বাঁধা।বর্ষাকালে গোমতী কুলটার মত হাসে। বিশাল বিশাল গাছের শেকড়ে সুরসুরি দিয়ে উপড়ে নিয়ে চলে আসে। এর ঘরের বেড়াটা, ওর সাজানো বাগান পুরোটা, যখন যা মনে আসে টেনে আনে। এইখানে সমতল। এই উদয়পুর। ছনবন। সেই দূর উজান থেকে এতসব গাছপালা, কাঠ, গাছের গুঁড়ি ভেসে ভেসে আসে। সমতল বলে একটু ধীর হয়েছে নদী। পাড়ে দাঁড়িয়ে লোকে সেসব ভেসে আসা জিনিস লক্ষ্য করে ছুঁড়ে মারে লঙ্কর। লাগিয়ে ফেলতে পারলে দড়ি ধরে থাকো। মানুষের রশিতে আটকে পড়া কিছুই নেয় না উন্মাদিনী গোমতী। অর্ধবৃত্তাকার পথে একে পাড়ে এনে ঠেকিয়ে দেয়। মানুষের লাকড়ির অভাব। সেসব সংগ্রহ করে রাখে। শুকিয়ে রাখে। জ্বালায়। এমন একটা লঙ্কর এখন জরিনার ঘরের দরোজায় ঝোলানো। এ জিনিস এখন আর কাজে আসে না। কেউ ছুঁড়বার নেই। কিন্তু জরিনার দরোজায় লঙ্কর ঝোলানোর অর্থ আছে। অর্থাৎ, সে চুপ করলো। মাঝে মাঝে এই জিনিস দরোজায় ঝুলিয়ে সে নীরব হয়ে যায়। কথা বলে না। কোনও লাটের বাট এলেও তাকে আর কথা বলাতে পারবে না। আমি তো খেয়াল করিনি। সেদিন গিয়ে ডাকি, ‘পরীভাবি, পরীভাবি’। নীরব। মজিদভাই বারান্দায়। হাত দিয়ে দেখালো দরোজায় ঝুলে আছে লঙ্কর। তবু ঘরে যাই। একটা আরামচেয়ার। এরকম জিনিস রহিম মিয়াঁ ছাড়া কারও বাড়িতে নেই। জরিনা প্রায় শুয়ে আছে। কেন যে শাড়ি উঠে আছে অনেকটা। পায়ের পাতা দুটি দেখা যাচ্ছে। ফুটে আছে যেন। দেবতার গায়ে পা লাগলে প্রণাম করে পাপস্খালন করে লোকে। এ দুটি পা দিয়ে যেন, উল্টে পূজাই দেওয়া যাবে। যেন ফুল, নিছনি। আমি সদানন্দ দাশগুপ্ত। কু-কু। তাকিয়ে রইলাম। ধীরে নরম হয়ে যাচ্ছে মন। মন যেন একটা কী, কী এই মন? যেন একটা কেমন রান্না, কে যেন আমার মনকে ছোট আঁচে তাতিয়ে কিসের সিরায় চুবিয়ে ধরেছে। এ জিনিস আমার হতে নেই। হতে নেই। বেরিয়ে আসবো, দেখি একটা আলো। সে বাইরে থেকে জরিনার মুখে এসে পড়েছে, নাকি তার নিজের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে বুঝতে পারিনি। ইশারায় বসতে বলল। বসি। জরিনা বেরিয়ে যায়। একটু পরে আসে। একটা বড় প্লেটে নানারকম সন্দেশ, পেতলের গেলাসে জল। গেলাস কুরুশে বোনা ঢাকনায় ঢাকা। আমার খাদ্যে মন নেই। মন অন্যত্র। আড়ে আড়ে সেইদিকে তাকাই যেখানে তার অপার্থিব পায়ের পাতা মাটিকে স্পর্শ করছে। জরিনা কী বোঝে, আমাকে আঙ্গুলের ইশারায় তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে বলে। বাইরে একটা গুনগুনের পিছা করছে মজিদ। সরাইল্যা কুত্তাটাও আছে। তার থাকাটারও একটা শব্দ আছে। খেয়ে নিলাম। জরিনা নেই। কখন বেরিয়ে গেল!
আমার
কী হল? নারীদর্শন করলাম? আমি কী করব? গা কাঁপছে। ধীরে বেরিয়ে আসি। এখন বিকাল। দূরে
কাঁচামিঠে আমগাছের নীচে তার একঘেয়ে আসনে বসে আছেন রহিম মিয়াঁ গপিস্ট। বেরোতেই
ইশারায় ডাকলেন। যাই। অর্ধেক চোখ দিয়ে আকাশে দেখেন রহিম। যেন আমাকেও দেখতে বলেন। দেখি আকাশ ভরা
শকুন। কে এদের জ্যামিতি শিখিয়েছে কে জানে। এরা আকাশে বৃত্ত আঁকবে বলে ওড়ে।
—
সদামিয়াঁ
—
কন
—
পারবেন?
—
কী
—
আমনের ভাবিরে কথা কওয়ান।
দেখেন আকাশে হগুণ। সব যাইব।
আকাশে
শকুন এলে লোকে ভয় পায়। কার ধলীগাই যাবে, কার শখের ছাগল যাবে, ঠিক নেই। লোকে
আগেভাগে গোমতী ছানাছানা করে। কোথাও উজান হতে কোনও গবাদির শব এসে কোনও চরায় আটকে
আছে কিনা দেখে। সেটা পেয়ে গেলে স্বস্তি। নইলেই শঙ্কা। ‘আমি কী পারুম?’
—
পারবেন, যান।
যাই।
বারান্দায় মজিদ। তার গায়ে গায়ে সেই গুনগুন। এত গান সে কোথা হতে আনে? সারা বাড়িতে
আজ অদ্ভুত নীরবতা। দূরে জহিরুলের ঘোড়া। দড়ি নেই তার। মুক্ত। ধীরে ঘরে যাই। নিচু
কাঠের টেবিলে তখনও সেই সন্দেশের প্লেট। গেলাস। তার থেকে জল নিয়ে চকচকে পালিশ করা
টেবিলে জরিনা লেখে, ‘ঊষা, সোনাচর’। ফাঙ্গাসের লেজ দিয়ে তৈরি চাবুকে কেউ মারলো
আমায়? কেউ এক লক্ষ সোনামুখি সুচ ফুটিয়ে দিল মেরুদণ্ডের কশেরুকার ফাঁকে ফাঁকে?
ঝটিতে বেরিয়ে চলে আসি।
আজ
আর বাড়ি যাব না। এখন থেকেই বসে থাকবো এইখানে, এই সোনাচরে। গোমতীর এই পাড় ঘেঁষা এই
চরে সোনা ফলে। তাই সোনাচর। আসি।একটু দূরে মেলাঘর থেকে আসে কুমোরের নৌকা। সোনাচরে তাদের
তাঁবু। একটা বৃদ্ধ নৌকার পাহারায়। বিচ্ছু ছেলেরা ঢিল ছুঁড়লে বিপদ। মাটির তৈজস তারা
সাজিয়ে তোলে নৌকায়। একটা ঢিল এসে পড়লে ভাঙবে।এমন করে সাজানো, একটা ভাঙলে সব এক এক
করে ভাঙে। চলে আসি। বিকেলের দিকে মুখ করে বসি। দূরে ওপাড়ে নদীর থেকে খাড়া উঠে
গিয়েছে পাড়। লাল হলুদ রং। তাতে ছোট ছোট গর্ত করে কী সব পাখি নিজেদের বাসা তৈরি
করেছে। উড়ে এসে সোজা ঢুকে যাচ্ছে, বেরিয়ে যাচ্ছে। ছোট ছোট কী পাখি দুটি ডানার
একেবারে প্রান্তদেশ নদীর জলে ছুঁইয়ে উড়ে চলেছে। ওইদিকে ছাতারিয়া গ্রাম। আগে নদী
সাঁতরে যেতে হত বলে, সাঁতারিয়া। ছাতারিয়া। কেমন অবসন্ন লাগছে। কেন? কুমোরেরা এখন
মাটির পাত্র নিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে। ধানের বদলে মৃৎপাত্র। কখনো টাকাও নেয়। তাদের
তাঁবু খালি। গিয়ে দেখি পাটি, কাঁথা আর শক্ত বালিশ। বসি। এলিয়ে পড়ি। একদিকে উলুধ্বনি, তার
আড়ে আড়ে আজানের শব্দ বেজে সন্ধ্যা নামে। আমাকে কে কী করেছে, এত ঘুম পাচ্ছে কেন?
যেন কে ঘুম পাড়িয়ে দিল।
দেখি,
গোমতীর কিছুটা কেটে নিয়ে মূল ধারা থেকে সরিয়ে একটি স্তব্ধপ্রায় ধারা তৈরি করা
হয়েছে। গোমতী তখনও গোমতী? কিন্তু এটি রাঙ্গামাটি। রাজধানী। এইখানে নৌবহর। রাজনৌকা
অনেকগুলো। একই রকম সব। রাজা ঠিক কোনটায়, শত্রু যেন ঠাহর করতে না পারে। প্রাসাদ
থেকে একটু দূরে কুলদেবতার মন্দির। তার পাশেই এই ছোট্ট বন্দর। দেবপ্রণাম করে সেই
নৌকা করে বেরিয়ে যাচ্ছে রাজপোশাক পরা কে যেন? কে? জহিরুল, নাকি সজু ওটা? কালো কালো
শরীরের মাঝিরা একে একে গিয়ে নৌকায় চেপেছে একটু আগে। একজন সান্ত্রির কাছে তাদের
শরীর দেখাতে হয়েছে। জ্বরজারি, রোগবালাই নেই তো? কারও কাছে নেই তো গুপ্ত অস্ত্র?
রাজপোশাক পরে যে লোক সবার আগে যাচ্ছিল, এখন দেখি সে তো আসলে মজিদ। দূরে একজন
পুরোহিত। এতক্ষণ রাজার যাবার পথে পথে শান্তিজল ছেটাচ্ছিল। এখন, ক্ষণে রহিম মিয়াঁ,
ক্ষণে আরেকটা কে যেন হয়ে যাচ্ছে। একটা আলোকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অনেকগুলো আলো।
কে ইনি? জরিনা? চারদিকে কে এত ঘুঙুর বাজালো? তীব্র একটা আলো এসে আমার চোখে পড়ে।
চোখ খুলে দেখি মুখ। কাঁচাপাকা দাড়ি, কষ বেয়ে কী পড়ছে, রক্ত? নাহ, পান খেয়েছে
লোকটা। উঠে বসি। ‘বাড়ি কই? ইহানে কিতা? মাল টানছেন?’ আমি উঠতে যাই, ‘না না ঘুমান
ঘুমান, আমরা নৌকাত যাই’। বলেই কুমোর লোকটা চলে যায়। এখন রাত? ঊষা হতে আর কতক্ষণ
বাকি? ঝিম ধরে আছে পৃথিবী। বাইরে বেরিয়ে দেখি আসলে ফিকে হয়ে গেছে রাত।
একটু
দূরে সেই ঝোপ। তার অনেক কুখ্যাতি। এখানে শ্যাওড়া গাছে শত্রুকে বাণ মারে লোকে। এই
গাছটাতে শত্রুকে প্রতিষ্ঠা করে তাতেই একটা তীর গেঁথে দেয়। শত্রুর কী হয় জানি না,
গাছের কিছু হয় না। চারদিকে ছোট ছোট বাঁশের
ঝোপ। মাঝখানে একটু জায়গা কেন যে নিকনো, কে জানে। অজান্তেই চলে আসি। জরিনা। দাঁড়িয়ে
নেই, পৃথিবী তাকে ঠেলে ওপরে ধরে রেখেছে যেন। যেন তার পদতলে থাকতে পেরে এই শেষরাতের
পৃথিবীর আনন্দ ধরে না। একটু একটু পাখিও পাঠালো কে। তারা কোথা হতে আধো আধো ডাকে।
আমাকে কে কী করেছে। দাঁড়াই। টলতে থাকি। জরিনা এগিয়ে এলে আপনি হাঁটু গেড়ে বসে পড়ি
মাটিতে। যেন, তৃষ্ণা একটা
রোগ, আমাকে ঔষধ দেওয়া হবে এমনি করে ঊর্ধ্বে তুলে ধরি মুখ।আমার এই চির অবনত মুখ সেই
পরী নিজের হাতে ধরে। চুম্বন করে। তারপর কাঁপতে থাকে জরিনা। আমার ভেতরে একটা আলো
এসে ঢুকে গেছে। শীত শীত, পুষ্প পুষ্প। কাঁপছি। আমাকে লতা করে পরীভাবি বৃক্ষ হল।
আবার আমাকে বৃক্ষ করে লতা। শরীর শরীরকে স্পর্শ করছে না। আবার ছেড়েও যাচ্ছে না। সকল
শূন্য হয়ে যাচ্ছে। স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে। কারা সব ঘুঙুর বাজাচ্ছে। জরিনা আমার কানের
কাছে মুখ নিয়ে আসে, ‘মানুষ থাইক্যা কী করবা? হেই তো মরণ লাগবো। ঘুঙুর অও, ঘুঙুর অও’।
আমি
কি আছি নাকি নাই? সময় এমন যে, কেবল চলে যায়।
অনেকের
সোরগোলে চেয়ে দেখি পড়ে আছি মাটিতে। সত্যই কি সদানন্দ দাশগুপ্ত আজকের ঊষাকালে আর
মানুষ নেই? ঘুঙুর? বেরিয়ে আসি এই বাণমারা ঝোপের থেকে। ছেলে ছোকরাদের বিরাট মিছিল।
বাঁশে উলটো করে বাঁধা জহিরুলের ঘোড়া। সামনে দুজন, পেছনে দুজন তাকে কাঁধে করে নিয়ে
আসছে। ফেলে যাবে নদীতে। উপরে তাকিয়ে দেখি
এখনও আকাশে বৃত্ত এঁকে চলেছে শকুন। ল্যাতপ্যাত করছে জহিরুলের ঘোড়ার গ্রীবা। মুখ
লেগে যাচ্ছে মাটিতে। চুম্বন করছে নাকি? নাকি পৃথিবীর পথে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৃত্যু
রেখে রেখে যাচ্ছে এই শব?
দ্রঃ
সদানন্দ কি সত্য নাকি মিথ্যা? আঠারো এপ্রিল, ১৯৮৪ সালের এই এন্ট্রিটা আমাকে পড়ে
শোনালেন নন্দ দারোগা। শেষ করেই উঠে দাঁড়ান, ‘কই গেলো জরিনা? কই গেলো মজিদ’? এই
মশাই, আপনে এই পাড়াত আছেন জন্ম থিকা। আপনে দেখছেন না?’
—
দেখছি। আছিলো তারা। সদাও
তো আছিলো। নিজেরে গুলি কইরা মারলো। তারেই কি দেখছি? দেখলেই ডাক দিছি, কু কইরা। হে
যে দেখতে জানে, হিডা কি আর জানছি?
—
দেখতাম চাই,আমি দেখতাম
চাই, জরিনারে দেখতাম চাই। ঘুঙুর কিতা?
নন্দদার
হাত থেকে খাতাটা নিই। গুছিয়ে রাখি, ‘সবাই জীবনে একবার জরিনারে দেখতে চায়। চাইতে
চাইতে দেরী করে, আকাশে শকুন আইয়া পড়ে’।
The best videos you need to make videos and videos for YouTube
উত্তরমুছুনVideos about making videos and videos for YouTube · Bet on horses and greyhounds and play with some mp3 juice great games and free horse racing action.