মানুষের মুখ। মানুষীর মুখ।



কাজলবান্ধব 


আমার দৌড় ছোট। তাই ছোট ছোট মানুষের সঙ্গেই আমার সখ্য। তাঁদের জীবন ঢুঁড়ে এনেই আমি লিখি। এবং দেখি, আমার প্রকাশভাগ্য ভালো না হলেও পাঠকভাগ্য মন্দ নয়। কাঁহা কাঁহা থেকে ফোন পেয়েছি। এসব ফেসবুক আসার আগেও। ভালো লাগে।

এর নাম কাজল। কাজল শীল। আমাদের ক্লাসমেট। সে বলে। কিন্তু কবে কোন ক্লাসে কোন স্কুলে সে আমাদের সঙ্গে পড়েছে কেউ মনে করতে পারি না। গোমতীর ওই পারে তার বাড়ি। বাড়ি পালিয়ে আসাম চলে যায়। একটি দুর্ঘটনায় ওর বাবা পঙ্গু হয়ে গেলে সে ফিরে আসে। ছোট করে দোকান দেয়। সেলুন। কোনও নাম নেই। সদাহাস্য, আনন্দময় আর সকলকে আপন করে নেবার ক্ষমতাবলে তার পসার হয়। এদিকে বাড়িতে দুটো বোন। পড়ায় ভালো। একটি ভাই তখনও ছোট। বোন দুটিকে কাজল বিএ অব্দি পড়িয়েছে। সুপাত্রস্থ করেছে। এদিকে পসার বাড়ায় শহরে এসে সেলুন করে। আমাদের ডেকে বলে একটা নাম দিতে। পরে নিজেই বলে, থাক আমিই দিইফ্রেন্ডস সেলুন। পাকা ঘরে দোকান হল। ব্যস্ততা বাড়লো। এবার ভাইকে এনে কাজ শেখায় কাজল। শিখে ফেললে ওকে চালু সেলুনে থিতু করিয়ে নিজে সেই আগের জায়গায় ফিরে যায়। গোমতীর ওপারে, টিনের চালায় একেবারে চুলকাটার দোকান।

এইসব মানুষের কাছে যাই। থাকি। নরসুন্দর কথা লেখার সময়ে কাজলের সঙ্গ করেছি বহুদিন। তেমনি অন্যান্য লেখার সময়েও। এবার যখন সদাপুরাণ করতে গেলাম। আটকে গেল। লিখতে পারছি না। একজন বন্ধু বলেন, ছবি আঁকতে গিয়ে মডেলের প্রেমে পড়ে গেলে এমনই হবে। কী জানি।

২টি মন্তব্য: