অবন্দিত অংশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অবন্দিত অংশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫

ধ্যান

সামান্য আলোর টুংটাং।
বাকিটা মহাশূন্যের নীরবতা।
এখন চোখের সঙ্গে চোখের
এখন মনের সঙ্গে মনের
জাদুতর্ক।

একটি আলোকবিন্দু
অপরকে ধাওয়া করে।
অতিশয় রহস্যময়
তাদের গন্তব্য।


তোমার বিভিন্ন আসন থরে থরে সাজানো।
হা করে আছে এক বিশাল অজগর,
এই গহ্বর ছাড়া বাকিটা অনন্তে ছড়ানো
স্পাইনাল কর্ড।

সাপের তালুতে এক প্রাচীন হীরক,
তার থেকে ছিটকে আসছে আলোর শুক্রাণু
তার থেকে ছিটকে আসছে আলোর ডিম্বাণু।


তোমার হাসির শব্দে সব ছন্নছাড়া।
চোখ মেললে দেখা যায় ধূপের বদলে
জ্বলছে আরও তীব্র তরুক্ষীর।
তোমাকে হাসিল করতে একটু একটু
বেড়ে যাচ্ছে ধোঁয়াদের ভিড়।

(অবন্দিত অংশঃ ১৯৯৬

শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০১৫

রূপ

অত ডাকি, সারারাত হরবোলা আমি, সাড়া নেই তোমার।
ডাক শুনে কাছে আসে গাছেদের বালক,
বলে যায় পক্ষীরানি তুমি, শব্দের পরী হও রাতের বেলা।
সারারাত তবু ডাকি
তুমি শুধু স্বপ্নের নীরবতা।
নাকি পাখিদের পাড়াতেও লেগে গেছে প্লেগ
নাকি রাত্রি মানে আমার'ই শব্দ টানার চুম্বক?

তোমাকে নিজের কণ্ঠ নকল করে ডাকি, শিশুদের ছবি ছুঁয়ে ডাকি,
একবার আসো বুকের ঘুঘু হাতে নিয়ে, অথবা, নিজেই হয়ে যাও তা।
তুমি খালি স্নানে স্নানে যাও, প্রতি ডুবে রূপ পাল্টে হয়ে যাও অন্য।

কেন তবে পাখি হলাম, তবে পশু হলাম শব্দ নিয়ে

যদি দিঘিদের কাছেই ছিল আরাধ্য মহামারী।

এবার এক না-শোনা শব্দ করি চোরা মেঘের প্রমাণ
তোমাদের দিঘিদের খরা নেই যদি, শুকনো বর্ষা হয়ে আসো। 
কাব্যগ্রন্থঃ অবন্দিত অংশ।। প্রকাশকালঃ১৯৯৬।। প্রকাশক বাংলাকবিতা।। প্রচ্ছদঃসুভদ্রা সিংহ।।

বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

পাখিয়াল

এই আমি, ওরা আমার অবশিষ্ট ভূত।
আকাশে রচিত শূন্যস্থান আজ যুদ্ধক্ষেত্র,
ক্লান্তির নামে সোনা ঝরে পড়ছে, উস্‌কে দিচ্ছে
স্মৃতির সঙ্গে স্মৃতির বিবাদ।
হাওয়াই চটি নিয়ে দীর্ঘ হচ্ছে দূরত্বের ছায়া,
তুমি আমার অগ্নি, যুদ্ধক্ষেত্রে এসে ভিখারি সেজেছো,
দ্যাখো আমার অবশিষ্ট ভূত ছুঁড়ে দিচ্ছে স্মৃতি,
পিতা কিংবা অঙ্গবিশেষ।
পিতার আগুনের বশে আমার মা ধোঁয়া;
কী কালি, কী কালি তোলে হাঁড়ির পেট ঘষ্টে,
পরিচ্ছন্ন হাঁড়ি হেসে উঠলে পুনর্বার আসে প্রসববেদনা,
চারিধার কঁকিয়ে ওঠে, দেয়াল থেকে ঝুপঝাপ ঝরে পড়ে ঘুঁটে।
পড়েই সোনা হয়ে চকচক করে, সোনার টুকরো ছেলে।
যৌবন আসার অনেক আগেই আসে তার পাখি,
শরীর কেবল পাখি পাখি করে।
আজ যুদ্ধক্ষেত্রে পাখি, তুমি কোন দানার কাজে আসবে?
যার নামে যুদ্ধ তার নাম নিলে পাপ,
যার কাছে পরাজয়, তার কোনও শেকল নেই,
শুধু তার কাছে নতজানু বাকি সব ভূত,
আমি অগ্নি, অগ্নি আমি, পুনশ্চ জঠরে যাব বলে
নারী দেখলে জ্বলে জ্বলে উঠি।
এই দহনের ফলে একবার পাখি, একবার পাখিয়াল
 হয়ে ভাবি,
কী নেব তুলে, উড়ন্ত ডানা, নাকি খাঁচার মালিকানা 

(কাব্যগ্রন্থঃ অবন্দিত অংশ, ১৯৯৬,প্রকাশকঃ বাংলা কবিতা, প্রচ্ছদ সুভদ্রা সিংহ)