এক.
অশোক দেব
ধীরে ছেড়ে
যাচ্ছেন কবিতা। লেখা হচ্ছে না। লিখতে পারছি না। তাহলে কি টান পড়েছে অভিজ্ঞতার
ভাঁড়ারে? বন্ধুরা বলেন, অভিজ্ঞতা মরে গেলে ধীরে মরে যায় লেখা। কী এই অভিজ্ঞতা? কাকে বলে অভিজ্ঞতা?
এই বৃষ্টির রাতে একজন সারেঙ্গি বাজাচ্ছেন। জোছনা সরিয়ে সেই সুর তাঁর চারপাশে
এঁকে দিচ্ছে বিষাদবিধুর আলপনা। আমি কি শুনছি সেই সুর? শুনছি না। নাকি চিনি তাকে? চিনি না তো। তবে কি এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোনও প্রান্তে কোনও একা মানুষ
সারেঙ্গি বাজাচ্ছেন না? দেখতে পাচ্ছি না, শুনতেও পাচ্ছি না। কিন্তু মনের শ্রবণ দিয়ে তো ঠিক শুনতে
পাই। হয়তো এই অশ্রুতি নিয়ে একদিন বাস্তব পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। তবুও এই
সুর সত্য। এ সত্য, অগোচর সত্য। এও তো একপ্রকার
অভিজ্ঞতা, যা বাস্তবে নেই? এরকম অশ্রুত ধ্বনি কি ভেতরে
বাজে না? বেজে ওঠে মিলিয়ে যায় না? স্মৃতি কি সুরময় নয়? একটি লালমাটির রাস্তার কথা মনে আসে। তার কোনও ঐশ্বর্য নেই। একটু গিয়েই আদিজনদের পাড়ায় সে শেষ হয়ে গেছে। এ পথের মনখারাপের রোগ
ছিল। বিকেলে সূর্যাস্তের লালিমা গায়ে লাগলে সে মাথা নিচু করে স্নানে যেত। নিজের শরীর হতে সকল পদচিহ্ন মুছে দিতে যেন
সেই পথ স্নানে চলে যেত। হাঁটতে হাঁটতে সাক্ষাৎ টের পেতাম
পথটি নেই। সে চলে গেছে। একদিন ফিরে এসে লিখেছিলাম, ‘এ পথে হাঁটতে হাঁটতে ঘুরে আসি সহজে নীলিমায়।’ লেখাটির বাকি অংশ মনে নেই। এই
বিস্মৃতিও সত্য। আবার কবিতাটি যদি এখন খুঁজে পাইও, তাহলে এখন আর তাকে ভালো লাগবে না, জানি। তখন নয়, আজই মনে হল, সেই পথটি যেন তার শরীরের পদচিহ্ন হতে মুক্তি পেতে স্নানে চলে যেত। সে চলে গেলে এক পথশূন্যতা থাকার কথা। সেই
শূন্যতাকে তখন নীলিমা মনে হয়েছিল। আজ তাকে অন্যকিছু, আরও অমোঘ মনে হয়। সেই অতীতে নীলিমাকেই সত্য মনে হয়েছিল, কবিতা বলে মনে হয়েছিল। একই জীবনে বয়সের নৌকা কিছুটা ভাটিতে
এলে দেখা গেল, সে সত্য সত্য নয়। সে কবিতা তেমন
কবিতা নয় আর। তাহলে আজকে যে মনে হচ্ছে কবিতা ছেড়ে যাচ্ছেন, সেটাও সত্য নয়? আরও একটু ভাটিতে চলে গেলে, অন্য কোনও দারুচিনি
দ্বীপের ভেতর দিয়ে যাবার কালে হয়তো মনে হবে, সত্য ছিল না কবিতার বিচ্ছেদ। তবে আর কী মূল্য রইল অভিজ্ঞতার?যে অভিজ্ঞতার অভিধা নেই, স্থিরমূল্য নেই, কালের সাথে যার মাত্রাহানি ঘটে যায়, সে তো নিজেই চরম মিথ্যা। মিথ্যাভার কি কবিতার চালিকা হতে
পারে?
অথচ একধরণের আনন্দ হয়। এই অতীতচারণায় আনন্দ হয়। ধীরে সকল ইন্দ্রিয় চুপ করে যায়, মন তার স্বাভাবিক গাম্ভীর্যে একা হয়ে পড়ে। অতীতে নিয়ে যায়।
যে পথ এখন নেই, ছিল, যে অনুভূতি এখন হচ্ছে না, আগে হয়েছে, সেখানে নিয়ে ভ্রমণ করিয়ে আনে।
স্বপ্নবৎ মনে হয়। যেন দিনশ্রমক্লান্ত হয়ে নিদ্রাচ্ছন্ন হয়েছি। এখন আর বুকের
চিনচিনে ব্যথা নেই। অম্লাধিক্য নেই, নেই কনুইয়ের কাছে ক্রমবর্ধমান সিবাসিয়ান সিস্ট। উত্তমর্ণের কুশলজিজ্ঞাসা নেই।
এমনকি সাধের নেশাটিও উহ্য হয়েছে। আকণ্ঠ বিষপান করে কে যেন গান গাইছে আমার কানের
কাছে। আমি শুয়ে আছি। বধির হয়ে গিয়েছি। তবু শোনা যাচ্ছে সেই বিষ মাখানো গান। যে
গাইছেন, তাঁর বেদনাটুকু টের পাচ্ছি, আবার নিজেও সেই বিষাক্ত সুরের প্রভাবে ধীরে মিইয়ে যাচ্ছি, মিশে যাচ্ছি গাঢ়তর কোনও অন্ধকারে। ঘাম দিয়ে ঘুম ভেঙে যায়।
জল খাই। কম্পিউটার খুলি। এই স্বপ্নদৃশ্য লিখে রাখতে হবে। এক্ষুণি। কিন্তু এতসব
স্যুইচ টেপাটেপি করতে করতে বোঝা গেল, সে তো স্বপ্ন মাত্র। আমার স্বপ্ন, তাতে পাঠকের ভাগ নেই। তাহলে এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম, স্বপ্ন দেখছিলাম? যতক্ষণ সেই অদ্ভুত স্বপ্ন দেখছিলাম, কম্পিউটারের এই তারজাল, এই সাদা স্ক্রিন, এই আলোর আক্রমণ কোথায় ছিল তখন? এখনই বা সে গায়িকা কোথায়,নিজে বিষ খেয়ে যে তাঁর সুরের সঙ্গে বিষ মেশাচ্ছিলেন? তাহলে কে সত্য, এই জাগরণ নাকি সেই নিদ্রা? এই বর্তমান নাকি সেই
বিকালের লাল পথ? কাকে আমি অভিজ্ঞতা বলব? ঘুমের মধ্যে কে জন্ম দিচ্ছিলেন একের পর এক দৃশ্য? কেই বা এত করে কাতর করেছিলেন বেদনায়? কিংবা যে সারেঙ্গি বাজে না, তার সুর কে শুনিয়ে দিয়ে যায় ? জানা কথা, সে হচ্ছে মনের কারসাজি। সকল
ইন্দ্রিয় ঘুমিয়ে গেলেও সে একা জেগে জেগে ষড়যন্ত্র করে চলে। কিন্তু এত যত্ন করে কোনও হেতুব্যাতিরেকে সে এই অদ্ভুত মৃত্যুদৃশ্যের রচনা
করেছে কেন? তার তাতে কী প্রয়োজন? মনের কী অপার প্রতিভা, সে এমন এক গুপ্তপদ্ধতি আবিষ্কার করেছে, যা দিয়ে গানের সঙ্গে বিষ মেশানো যায়। এমন এক স্বর অবিষ্কার করেছে যা কিনা
শব্দহীন আবার শ্রুতিসাধ্য। জাগরণে এইসব মিথ্যে হয়ে গেল লহমায়। তাহলে মনের কারবার
কি সকলই মিথ্যা নিয়ে, ছলনাকারী সে? এই ক্রমক্ষীয়মান বর্তমানকালে কিছুই তো সত্য থাকছে না।
সেদিনের সেই কবিতা আজ আর কবিতা বলে মনে হয় না। আজকের স্বপ্নের সত্যকে শুধু
স্বপ্নেই সত্য মনে হয়। জাগরণে সে তার সকল আয়োজন নিয়ে অন্তর্হিত হয়ে যায়। তাহলে কী
আছে বিশুদ্ধ অভিজ্ঞতা?
মনে এক কামারশালা আছে। সেখানে নানারকম শব্দ হয়ে চলেছে। কোনও শব্দ লোহিততপ্ত -- স্পর্শ করা যাচ্ছে না, কোনও শব্দের শরীর হতে আগুনের ফুলকি বেরিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। কোনও শব্দ হাপড়ের
আকর্ষণে টেনে নিচ্ছে সকল বাতাস, কোনও শব্দকে এইমাত্র
জলের মধ্যে চুবিয়ে ধরে শান্ত করা হল। এই শব্দলোক হতে কাকে এনে কোথায় বসাতে হয় -- কবিতায়? সারাদিন, এই আলো হাওয়া রৌদ্রে ঘুরে ঘুরে, বরষাপীড়িত হয়ে, ক্লান্তিতে অবশ হয়ে ঘরে এসে বসি। লিখতে বসি। কে যেন এসে সে কামারশালা খুলে
দেয়। হাতুড়ি চলতে শুরু করলেই বোঝা যায়, না তো, এ তো সারাদিন চলেছে। সারাদিন কোনও
না কোনওভাবে এই মনকামারের কাছে গিয়েছি। এখন টাইপ করতে বসেছি ঠিক। কিন্তু সারাদিন
যে মনে মনে টাইপ করতে চাইনি তা তো নয়। তখন সে চেষ্টা থিতু হতে পারেনি।
আরেকটা কে এসে টেনে নিয়ে পরীক্ষার খাতা দেখতে বসিয়ে দিয়েছে। মন তাহলে একটি নয়? বহুতে বিভাজিত? একজন ব্যক্তি আসলে কতগুলি মনের সমাহার। তার মধ্যে কার ‘অভিজ্ঞতা’ কবিতার কাজে আসে? অথবা মনের নিজস্ব গুণ্ডাবাহিনি রয়েছে। এদিকে যে যেতে চায়, তাকে সে সেদিকে সরিয়ে নেয়। শব্দফুলকি দেখতে গেলে টেনে এনে
খাতা পরীক্ষা করতে বসিয়ে দেয়। রাতে এসে সাধ্য সাধনা করি, কিছু কি লিখতে পারব না আর? হয় না। তখনই মনে হয় ছেড়ে যাচ্ছেন কবিতা। এই ব্যর্থতায় চেষ্টানাশ করার চেয়ে
নিদ্রা কাম্য। প্রার্থনা করি যেন নির্বিঘ্ন নিদ্রা হয়। আগামীকাল সকালে আবার রেনকোট পরতে হবে, বোতলে জল নিতে হবে। সারাদিন ক্লাসে গিয়ে চেঁচাতে হবে। একটি
সফল নিদ্রাই দিতে পারে ঝরঝরে সকাল। নিদ্রার লোভে কখনও ঠিক টুক করে গিলে ফেলি আধ
মিলিগ্রামের একটি ইটিজোলাম। কোনও কোনও রাতে সকল উৎকণ্ঠার অবসান আসে। স্বপ্ন-দুঃস্বপ্নের
অতীত এক নিদ্রায় লীন হয়ে যায় সবকিছু। এই মরপৃথিবী মিথ্যাও হয় না, সত্যও থাকে না। সারারাত কোথা দিয়ে কেটে যায়। কোথা হতে চলে
আসে ঊষার আলো, পক্ষীর আলোচনা। ঝরঝরে হয়ে যায় সব।
কে যেন সারারাত ধরে মনের মধ্যে গোলাপ চাষ করে গেছে। তার সৌরভে ভরে আছে জগৎ। তখন
এইসব কামারশালা, এইসব রেনকোট আর খাতাপরীক্ষা, ফেসবুকের লাইকলোলুপতা কোথায় ছিল? এই ঊর্মিবিহীন সমুদ্রের মত নিদ্রা কার উপহার? মন তার সেনাদল সহ কোথায় গিয়ে বসে থেকেছে? এরকম নিদ্রা হতে জেগে মনে হয়, এই তো জাগলাম। এই যে জাগরণের অভিজ্ঞতা, তা হয়তো সত্য। কিন্তু তার আগে যে নিদ্রালীন শূন্যকাল সেখানে তো সত্যমিথ্যা
কিছুই ছিল না। এই নিদ্রাকাল কি একা কাটিয়েছি আমি? আমিত্বের বিলোপ হয়েছিল তখন। তখন তো আর কবিতার প্রয়োজন ছিল না, লিখতে না পারার বিকারও ছিল না। নাকি তখনও চিরজাগ্রত থেকেছে
কেউ। গভীরে গভীরে। সেই সকলভোলানো নিদ্রাতেও, সেই অননুভূতিকেও সে অনুভব করেছে। সে না থাকলে জাগরণে কে মনে করিয়ে দেয়, হে ব্যর্থ কবি, তোমার নাম অশোক দেব। স্মৃতিবিস্মৃতির পারে গভীর সেই আত্মলুপ্তির পরে কে আবার
মনে করিয়ে দেয় বাবাকে স্যালাইন দেওয়াতে হবে আজ। আজ মঙ্গলবার। এই মায়ান্ধকারকে কী
নামে ডাকব? কী নাম এই অভিজ্ঞতার?
এইসব তো হচ্ছে। এই আত্মযাত্রায় হাঁটি। আর দেখি, আসলে কোনও অভিজ্ঞতাই সঞ্চয় করা গেল না। একটা পথ ধরে হাঁটছি, যে আসলে গন্তব্যগামী নয়। অথবা এই দেহের গভীরেই কোথাও রয়ে
গেছে সে গন্তব্য। তাকে নির্দেশ করা যাচ্ছে না। দৃষ্টির অতি নিকটে এলে যেমন দেখতে
পাওয়া যায় না, এমনকি অতিপ্রিয় কোনও মুখ।
এই ভ্রান্তিবিলাসের ফল কিছু শব্দের ঐশ্বর্যহীন
সংযোজনা। এরা আছে, গ্রন্থিত হয়েছে। বারবার ধরে ধরে
ফেসবুকে পুরনো কবিতা পোস্ট করি। বারবারই মনে হয়, নাহ্ এরকম তো লিখতে চাইনি তখন। অন্যকিছু আরও একেবারে অন্যকিছু লিখতে
চেয়েছিলাম। পোস্ট করি তবু। টাইপ করতে গিয়ে নিজেই নাকচ করে দিই এইসব কবিতার
কাব্যপরিচয়, কারণ এবং ফল। সুতরাং যে ‘অভিজ্ঞতা’ হতে এইসব লিখে ফেলেছিলাম, তার মরীচিকা সরে গিয়ে উষর মরুবালুকার বিস্বাদ পাই কেবল। এইসব প্রাক্তন
অভিজ্ঞতাসকলের কী মূল্য? তাহলে কোথায় যাব? কে নিয়ে যাবে? নিজেকেই যেতে হয় এক একাপথ ধরে। কিন্তু তার উপায় জানা হয় না সারা
জীবনে। কেবল মরীচিকার অনুসরণ করে যাই আমরা।
এই মরুভ্রমণ, এই বিভ্রান্তি আজ ফেসবুকের
দেওয়ালে দেওয়ালে দেখতে পাই। দলভূক্ত রাজনীতিকে যে সত্য মনে করেন, তিনি অকাতরে সেইসব কবিতা লিখে যাচ্ছেন, যা তার দলপরিচয়কে সন্তুষ্ট করবে। একদল সেই তুমি-আমি-র
ক্লান্তিকর পুনরাবৃত্তি করেন, অথচ কোনও এক জাদুবলে
নিজেরা ক্লান্ত হচ্ছেন না। একদল আছেন, যারা লিখছেন, প্রকাশিত হচ্ছেন। নিজেকে কিছুতেই
পরীক্ষা করছেন না। অন্ধকারে যদি তারা কোনওদিন নিজেকেই টুটি চেপে ধরেন, জিগ্যেস করেন, ‘বল শালা কী লিখেছিস, কেন লিখেছিস’, তবে সেই আত্মধমকের চোটে তারা নির্ঘাৎ নিজগ্রাত্রে প্রস্রাব করে দিতে পারেন।
সুখের বিষয়, তারা লেখেন, নিজেকে একলা পেয়েও নিজের সাথে মাস্তানি করেন না। ফলে একঘেয়ে
পুনরাবৃত্তি করেন। কবির অভিমান কাঁধে সিঁড়ি নিয়ে কেবল আরও বস্তুলাভের উচ্চতার
সন্ধান করেন। অথবা একধরণের কল্পনাবিলাস দেখা যায়, যেখানে মানুষ নয়, জীবন নয়, অন্যকিছু খেলা করে। এদের লেখায় উদ্দণ্ড কল্পনার
উল্লম্ফন দেখতে পাওয়া যায় খালি। বাংলার কবি তেলচিটচিটে চাঁদ দেখাচ্ছেন বহুদিন ধরে।
বহুদিন ধরে করোটির কলিংবেল বাজাচ্ছেন। এরা সেটাকেই আরেকটু বুদ্ধিবলে চমকদার করছেন।
বিমূর্তায়নকেই সিদ্ধি ভেবে নিজের অন্তরের আলো নিভিয়ে দিচ্ছেন। এতকালের শিল্পতত্ত্ব
ভরা বালিশ ছিঁড়ে তুলো ওড়াচ্ছেন। নারীত্বের এতকালের রুদ্ধশ্বাসকে ঝঞ্ঝারূপ দেবেন বলে গ্রীনরুম দখল করতে তৎপর হয়েছেন অন্য
একদল। বাংলা কবিতার করুণতম বয়স এখন। তাঁকে দেখি। দেখে, সব দেবতাকে ছেড়ে নিজের প্রাণের কাছে চলে আসি। ভাবি, কী দিতে পারে এই অপজীবন বাংলা কবিতালক্ষ্মীর পদতলে? কিছুই কি পারে?
আসলে এক সুবর্ণকূপ আছে। জাগরণে নয়, নিদ্রায় নয়, স্বপ্নে কিংবা দুঃস্বপ্নের ভেতর নয়, তাহলে কোথায়? তার দেখা মেলে অন্য কোনওখানে অন্য কোনও উপায়ে। আত্মজিজ্ঞাসায়, নিজের গভীর অন্দরমহলেই তার দ্যুতিবিরাজ। হিরার ভাণ্ডার। তার
সন্ধান করিনি এতকাল। গন্ধে মাতোয়ারা হয়েছি, আপন কস্তুরীনাভিকে নিজেতে খুঁজিনি। এদিক-ওদিক ছুটেছি কেবল। ভুল হয়ে গেছে। জানি
সেই পরশপাথর এ জন্মে আর পাওয়া হবে না। নিজের একেবারে গা ঘেঁষে বসা হল না, দেখা হল না কী নিয়ে শুরু হয়েছিল পথচলা। নীরবতার থেকে
নীরব, স্থিরতার থেকে স্থিরতর এক আত্মগোলক আছে। তার সন্ধান পেলে
দস্যুও কবি হয়ে যায়। কবিদেবতা হয়ে যায়। লেখা হচ্ছে না বলে, লিখতে পারছি না বলে তখন আর কোনও আক্ষেপ থাকে না। তখন
নিশ্চিত হওয়া যায় যে, লিখতে কেউ পারে না। লেখা হয়।
সান্ত্বনা নয়, এই উচ্চাশা নিয়ে বেশ ভাল আছি।
কুশলে আছি।
খুব সুন্দর কাকু!
উত্তরমুছুনভালোবাসা
মুছুন